"দেবপ্রসাদ ঘোষ"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
("জন্ম ১৫ মার্চ ১৮৯৮। মৃত্যু ১৪ জুলাই ১৯৮৫। জন্মস্থান গাভা,..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
জন্ম ১৫ মার্চ ১৮৯৮। মৃত্যু ১৪ জুলাই ১৯৮৫। জন্মস্থান গাভা, ঝালকাঠি, বরিশাল। পিতা ব্রজমোহন কলেজের অধ্যাপক ক্ষেত্রনাথ। মাতা অন্নদাসুন্দরী কবি ছিলেন। খ্যাতনামা গণিতজ্ঞ, সুপ-িত শিক্ষাব্রতী ও রাজনীতিবিদ। কৃতী ছাত্র দেবপ্রসাদ ‘জীবনে কখনো দ্বিতীয় হননি কোনো পরীক্ষায়’। ১৯০৮ খ্রি. এন্ট্রান্স ও ১৯১০খ্রি. আই.এ. পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেও স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বরিশালের ব্রজমোহন স্কুল ও কলেজের ছাত্র হওয়ায় সরকারি বৃত্তি থেকে তিনি বঞ্চিত হন। ১৯১২খ্রি. সিটি কলেজ থেকে গণিতে বি.এ. পরীক্ষায় সর্বপ্রথম স্থান অধিকার করে  ঈশান স্কলারশিপ লাভ করেন। ১৯১৪ খ্রি. মিশ্র গণিতে এম.এ পাশ করে রিপন কলেজে অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এক সময় ভাইস-চ্যান্সেলর আশুতোষ মুখার্জি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল কলেজ ছাড়া অন্যত্র ল-এর ক্লাস নেওয়া চলবে না। তবে যদি কোন কলেজের ছাত্র ল পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হয় তবেই সেখানে ল ক্লাস চলতে দেয়া হবে। অধ্যাপক দেবপ্রসাদ রিপন কলেজের ল ক্লাসের ছাত্র হিসাবে ১৯১৮খ্রি. ল পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে কলেজের ল বিভাগকে চালু রাখেন। ১৯৪১খ্রি. তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অধ্যক্ষপদে যোগ দেন এবং ১৯৫০খ্রি. অবসর গ্রহণ করেন। ১৯২০খ্রি. প্রতিষ্ঠিত শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর ‘সারভেন্ট’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনকালে সাংবাদিকতা করেছেন। কিছুদিন হাই কোর্টে ব্যবহারজীবীর কাজও করেছেন। অনেকগুলি ভারতীয় ও ইউরোপীয় ভাষায় তাঁর বিশেষ দখল ছিল। বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ হিসাবে সমাদৃত ছিলেন। বাংলা ভাষা ও বানান নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর পত্র-বির্তক এক সময় বিদগ্ধ মহলে যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল। এ বিষয়ে তাঁর রচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা বাণান’ গ্রন্থটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক সমিতির সদস্য ছিলেন। সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন ১৯১৫খ্রি. কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে। ১৯২৩-৩২খ্রি. বাংলার ন্যাশনালিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন। ১৯৩৩খ্রি. হিন্দু মহাসভায় যোগ দেন। পরে ১৯৫১খ্রি. নব-প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনসংঘের সদস্য হন। ১৯৫২খ্রি. নির্বাচনে রাজ্যসভার সদস্যপদ লাভ করেন। ভারতীয় জনসংঘের সভাপতি ছিলেন পাঁচ বছর এবং রাজ্য শাখার সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। ইংরেজি  ও বাংলা উভয় ভাষাতেই সুবক্তা হিসাবে খ্যাতি ছিল। রচিত গ্রন্থ: ‘হিন্দু কোন পথে’, ‘সতের বছর পরে’, ‘তরুণিমা’(সাহিত্রিক ও সামাজিক আলোচনা), ‘ত্রৈরাশিক’(ব্যঙ্গ কবিতা),  ‘Shifting Scenes’ প্রভৃতি। তা ছাড়া তাঁর গণিতের পাঠ্যপুস্তক এককালে স্কুল-কলেজে বহুল-প্রচলিত ছিল। ঈশান স্কলার শান্তিসুধা ঘোষ তাঁর ভগিনী।  
+
জন্ম ১৫ মার্চ ১৮৯৮। মৃত্যু ১৪ জুলাই ১৯৮৫। জন্মস্থান গাভা, ঝালকাঠি, বরিশাল। পিতা ব্রজমোহন কলেজের অধ্যাপক ক্ষেত্রনাথ। মাতা অন্নদাসুন্দরী কবি ছিলেন।  
 +
 
 +
[[চিত্র:দেবপ্রসাদ ঘোষ.jpg]]
 +
 
 +
খ্যাতনামা গণিতজ্ঞ, সুপ-িত শিক্ষাব্রতী ও রাজনীতিবিদ। কৃতী ছাত্র দেবপ্রসাদ ‘জীবনে কখনো দ্বিতীয় হননি কোনো পরীক্ষায়’। ১৯০৮ খ্রি. এন্ট্রান্স ও ১৯১০খ্রি. আই.এ. পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেও স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বরিশালের ব্রজমোহন স্কুল ও কলেজের ছাত্র হওয়ায় সরকারি বৃত্তি থেকে তিনি বঞ্চিত হন। ১৯১২খ্রি. সিটি কলেজ থেকে গণিতে বি.এ. পরীক্ষায় সর্বপ্রথম স্থান অধিকার করে  ঈশান স্কলারশিপ লাভ করেন। ১৯১৪ খ্রি. মিশ্র গণিতে এম.এ পাশ করে রিপন কলেজে অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এক সময় ভাইস-চ্যান্সেলর আশুতোষ মুখার্জি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল কলেজ ছাড়া অন্যত্র ল-এর ক্লাস নেওয়া চলবে না। তবে যদি কোন কলেজের ছাত্র ল পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হয় তবেই সেখানে ল ক্লাস চলতে দেয়া হবে। অধ্যাপক দেবপ্রসাদ রিপন কলেজের ল ক্লাসের ছাত্র হিসাবে ১৯১৮খ্রি. ল পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে কলেজের ল বিভাগকে চালু রাখেন। ১৯৪১খ্রি. তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অধ্যক্ষপদে যোগ দেন এবং ১৯৫০খ্রি. অবসর গ্রহণ করেন। ১৯২০খ্রি. প্রতিষ্ঠিত শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর ‘সারভেন্ট’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনকালে সাংবাদিকতা করেছেন। কিছুদিন হাই কোর্টে ব্যবহারজীবীর কাজও করেছেন। অনেকগুলি ভারতীয় ও ইউরোপীয় ভাষায় তাঁর বিশেষ দখল ছিল। বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ হিসাবে সমাদৃত ছিলেন। বাংলা ভাষা ও বানান নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর পত্র-বির্তক এক সময় বিদগ্ধ মহলে যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল। এ বিষয়ে তাঁর রচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা বাণান’ গ্রন্থটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক সমিতির সদস্য ছিলেন। সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন ১৯১৫খ্রি. কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে। ১৯২৩-৩২খ্রি. বাংলার ন্যাশনালিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন। ১৯৩৩খ্রি. হিন্দু মহাসভায় যোগ দেন। পরে ১৯৫১খ্রি. নব-প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনসংঘের সদস্য হন। ১৯৫২খ্রি. নির্বাচনে রাজ্যসভার সদস্যপদ লাভ করেন। ভারতীয় জনসংঘের সভাপতি ছিলেন পাঁচ বছর এবং রাজ্য শাখার সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। ইংরেজি  ও বাংলা উভয় ভাষাতেই সুবক্তা হিসাবে খ্যাতি ছিল। রচিত গ্রন্থ: ‘হিন্দু কোন পথে’, ‘সতের বছর পরে’, ‘তরুণিমা’(সাহিত্রিক ও সামাজিক আলোচনা), ‘ত্রৈরাশিক’(ব্যঙ্গ কবিতা),  ‘Shifting Scenes’ প্রভৃতি। তা ছাড়া তাঁর গণিতের পাঠ্যপুস্তক এককালে স্কুল-কলেজে বহুল-প্রচলিত ছিল। ঈশান স্কলার শান্তিসুধা ঘোষ তাঁর ভগিনী।  
  
 
----
 
----
 
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।
 
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।

১২:২১, ১৯ মার্চ ২০২০ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ

জন্ম ১৫ মার্চ ১৮৯৮। মৃত্যু ১৪ জুলাই ১৯৮৫। জন্মস্থান গাভা, ঝালকাঠি, বরিশাল। পিতা ব্রজমোহন কলেজের অধ্যাপক ক্ষেত্রনাথ। মাতা অন্নদাসুন্দরী কবি ছিলেন।

দেবপ্রসাদ ঘোষ.jpg

খ্যাতনামা গণিতজ্ঞ, সুপ-িত শিক্ষাব্রতী ও রাজনীতিবিদ। কৃতী ছাত্র দেবপ্রসাদ ‘জীবনে কখনো দ্বিতীয় হননি কোনো পরীক্ষায়’। ১৯০৮ খ্রি. এন্ট্রান্স ও ১৯১০খ্রি. আই.এ. পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেও স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বরিশালের ব্রজমোহন স্কুল ও কলেজের ছাত্র হওয়ায় সরকারি বৃত্তি থেকে তিনি বঞ্চিত হন। ১৯১২খ্রি. সিটি কলেজ থেকে গণিতে বি.এ. পরীক্ষায় সর্বপ্রথম স্থান অধিকার করে ঈশান স্কলারশিপ লাভ করেন। ১৯১৪ খ্রি. মিশ্র গণিতে এম.এ পাশ করে রিপন কলেজে অধ্যাপক নিযুক্ত হন। এক সময় ভাইস-চ্যান্সেলর আশুতোষ মুখার্জি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল কলেজ ছাড়া অন্যত্র ল-এর ক্লাস নেওয়া চলবে না। তবে যদি কোন কলেজের ছাত্র ল পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হয় তবেই সেখানে ল ক্লাস চলতে দেয়া হবে। অধ্যাপক দেবপ্রসাদ রিপন কলেজের ল ক্লাসের ছাত্র হিসাবে ১৯১৮খ্রি. ল পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে কলেজের ল বিভাগকে চালু রাখেন। ১৯৪১খ্রি. তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজে অধ্যক্ষপদে যোগ দেন এবং ১৯৫০খ্রি. অবসর গ্রহণ করেন। ১৯২০খ্রি. প্রতিষ্ঠিত শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর ‘সারভেন্ট’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনকালে সাংবাদিকতা করেছেন। কিছুদিন হাই কোর্টে ব্যবহারজীবীর কাজও করেছেন। অনেকগুলি ভারতীয় ও ইউরোপীয় ভাষায় তাঁর বিশেষ দখল ছিল। বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ হিসাবে সমাদৃত ছিলেন। বাংলা ভাষা ও বানান নিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর পত্র-বির্তক এক সময় বিদগ্ধ মহলে যথেষ্ট আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল। এ বিষয়ে তাঁর রচিত ‘বাঙ্গালা ভাষা বাণান’ গ্রন্থটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক সমিতির সদস্য ছিলেন। সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন ১৯১৫খ্রি. কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে। ১৯২৩-৩২খ্রি. বাংলার ন্যাশনালিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন। ১৯৩৩খ্রি. হিন্দু মহাসভায় যোগ দেন। পরে ১৯৫১খ্রি. নব-প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনসংঘের সদস্য হন। ১৯৫২খ্রি. নির্বাচনে রাজ্যসভার সদস্যপদ লাভ করেন। ভারতীয় জনসংঘের সভাপতি ছিলেন পাঁচ বছর এবং রাজ্য শাখার সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই সুবক্তা হিসাবে খ্যাতি ছিল। রচিত গ্রন্থ: ‘হিন্দু কোন পথে’, ‘সতের বছর পরে’, ‘তরুণিমা’(সাহিত্রিক ও সামাজিক আলোচনা), ‘ত্রৈরাশিক’(ব্যঙ্গ কবিতা), ‘Shifting Scenes’ প্রভৃতি। তা ছাড়া তাঁর গণিতের পাঠ্যপুস্তক এককালে স্কুল-কলেজে বহুল-প্রচলিত ছিল। ঈশান স্কলার শান্তিসুধা ঘোষ তাঁর ভগিনী।


তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।