দেউলার যুদ্ধ, ভোলা, ১৯৭১

Barisalpedia থেকে

সাঁচড়া ইউনিয়নে এক খুনের মামলা তদন্তে আসে ১৪ জন রাজাকার ও দুই পুলিশ। তারা প্রথম দেওলাকুটি চৌধুরীবাড়িতে ওঠে। তাদের সংবাদ পেয়ে কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমান ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ১৫ অক্টোবর বাড়ি ঘিরে ফেলে। দুটি দল করা হলো, এক দলের নেতৃত্ব সিদ্দিকুর রহমান, দ্বিতীয় দলের নেতা শামসুল হক। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে রাজাকার-পুলিশ ভীত হয়ে আত্মসমর্পণ করে। ১২টি অস্ত্র ও গুলি হস্তগত হয়। রাজাকার-পুলিশের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ১৬ অক্টোবর পাকবাহিনী তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে দেউলা যাত্রা করে। তাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে কমান্ডার সিদ্দিকুর রহমান মুক্তিযোদ্ধদের নিয়ে দেউলা তালুকদারবাড়ির পাশে ওঁৎ পেতে থাকে। ৫০ গজ সামনে এলে তারা হঠাৎ পাকবাহিনীকে আক্রমণ করে ৮-১০ জনকে হত্যা করে। অবশিষ্টরা পালাতে থাকে। গ্রামবাসী লাঠিলেজা নিয়ে তাদের আক্রমণ করে। দিনের ১২টা হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। এ যুদ্ধে ২৯ জন পাক আর্মি, বোরহানউদ্দিন থানার ওসি ও দুই পুলিশ নিহত হয়। রাজাকার গ্রেপ্তার হয় ৮ জন। মুক্তিযোদ্ধারা ৪০টি অস্ত্র পায়। দেউলা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা: ১. সিদ্দিকুর রহমান, কমান্ডার; ২. মওলানা মাকসুদুর রহমান; ৩. আলহ্জ্ব শামসুল হক; ৪. মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী; ৫. নায়েক আছমত আলী; ৬. ল্যান্স নায়েক জিয়াউল হক; ৭. নায়েক গিয়াস উদ্দিন; ৮. হাবিলদার নাসির; ৯. বাংলাবাজারের সিদ্দিক; ১০. নায়েক শান্ত; ১১. গাজী জয়নাল আবেদীন; ১২. কমান্ডার শহীদুল আলমসহ শতাধিক। দেউলার যুদ্ধে বিজয়ের কাহিনী শুনে মোতাহার মাস্টার এমপিএ, রেজা-ই করিম চৌধুরী এমপিএ কমান্ডার সিদ্দিককে ধন্যবাদ জানাতে আসেন।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।