জয়দেব

Barisalpedia থেকে

রাজা জয়দেব চন্দ্রদ্বীপ রাজবংশের ষষ্ঠ রাজা। তিনি ১৪৬০ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন রাজা হরিবল্লভ।

রাজা হরিবল্লভের মৃত্যুর পর তার পুত্র জয়দেব ১৪৬০ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। মিঃ বেভারিজ জয়দেবকে ভুল করে কৃষ্ণবল্লভ বলেছেন। ঘটককারিকাদের বিবরণে তার নাম জয়দেব বা জগতদেব রূপে লিখিত দেখা যায়। মিঃ বেভারেজ বলেছেন চন্দ্রদ্বীপ রাজবংশের সদস্যরা তাদের পূর্বপুরুষের সঠিক তালিকা দিতে পারেননি। তাদের দেয়া তালিকার মধ্যে নামের পার্থক্য দেখা যায়। মনে হয় দনুজমর্দন হতে জয়দেব এর মধ্যে দু’একজন রাজার নাম বাদ পড়েছে, যে কারণে দনুজমর্দনের বংশ তালিতকায় রাজাদের নামগুলোর মধ্যে ঐক্য দেখা যায়না।

রাজা জয়দেব একজন বীরযোদ্ধা ছিলেন। ঘটককারিকাগণ তার পৌত্র পরমানন্দকে লক্ষ্য করে লিখেছেন “তস্য মাতামহ কীর্তি জয়দেবো মহাবলী”। তারা জয়দেবকে সেন বংশের লোক বলেছেন। রাজা জয়দেব যুদ্ধ করে আক্রামণকারীদের পর্যুদস্ত করে বীরত্বের পরিচয় দেন। বীরত্বের জন্য ঘটককারিকাগণ জয়দেবকে মহাবলী আখ্যা দিয়েছেন। ইলিয়াস শাহী মুসলমানদের চন্দ্রদ্বীপ আক্রমণ প্রতিহত করে তিনি স্বাধীনতা রক্ষা করেন। তার সময় গৌড়ের সুলতান কিছুদিনের জন্য বাকলা দখল করে নেন। কিন্তু তিনি তাদের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করে বাকলার স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনেন।

জালাল উদ্দীনের বংশধর শামস উদ্দীনের মৃত্যুর পর ইলিয়াস শাহী বংশের সুলতান নাসির উদ্দীন মাহমুদ গৌড়ের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার মৃত্যুর পর ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দে রুকনউদ্দীন বরবক শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ১৪৫৯-১৪৬৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চন্দ্রদ্বীপ রাজ্য আক্রমন করেন। জয়দেব বীরবিক্রমে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। যুদ্ধে পরাজয় বরণ করে তিনি সুলতানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। রাজা জয়দেব দক্ষতার সাথে প্রায় স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করেন।

তিনি অপুত্রক অবস্থায় ১৪৯০ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।