ছিদাম চৌধুরীর বসতবাড়ি, পাথরঘাটা
বৃটিশ শাসনামলে পাথরঘাটার জমিদার আলেফ চৌধুরির পিতা আতাউদ্দিন এবং চাচা মাহতাব উদ্দিন ইংরেজদের মালিকানাধীন লবণ কোম্পানীর সামান্য কর্মচারি ছিলেন বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে তারা ইংরেজ প্রশাসন থেকে পাথরঘাটার জ্ঞানপাড়া নামের তালুক বন্দোবস্ত হিসেবে গ্রহণ করে। এই পরিবারের পুত্র আলেফ চৌধুরি এই এলাকায় ছিদাম চৌধুরি নামে খ্যাতিমান ছিলেন। বৃহত্তর বরিশালের কৃষক বিদ্রোহের অন্যতম নেতা হিসেবেও ছিদাম চৌধুরির ভিন্ন পরিচয় কোনো কোনো গবেষক উলে¬খ করেছেন। ঝালকাঠি বাস-া অঞ্চলের সেন পরিবার পাথরঘাটার কালমেঘা অঞ্চল একদল কৃষক দ্বারা আবাদ করায়। পরবর্তী সময়ে সেন পরিবার ঐ সকল কৃষকদের দখলী স্বত্ব প্রদান না করায়, ্িবক্ষুদ্ধ কৃষকেরা বিদ্রোহ করে ছিদাম চৌধুরীর সাহায্য এবং আশ্রয় গ্রহণ করে। দুঃসাহসী ছিদাম চৌধুরীর জীবিত অবস্থায় সেন পরিবারের পক্ষে বিদ্রোহ দমনে তেমন কোনো ভুমিকা গ্রহণ করা সম্ভব না হলেও তার মৃত্যুর পর তারা ব্যাপকভাবে প্রজা নিপীড়ন শুরু করে। তারপরেও কৃষকেরা খাজনা দিতে অস্বীকার করায়, ইংরেজ সরকার কালমেঘা তালুক খাস মহলের অধীনে আনয়ন করে। ছিদাম চৌধুরীর পরিবার কৃষকদের পক্ষে দাঁড়ানো এক ঐতিহাসিক চরিত্র। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে ছিদাম চৌধুরী চন্দ্রদ্বীপ বাকলা অঞ্চলে বহু লোকাহিনীর নায়ক রূপে চিত্রিত হয়েছেন। তাঁর বাড়িটি তাই ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: সাইফুল আহসান বুলবুল। বৃহত্তর বরিশালের ঐতিহাসিক নিদর্শন। গতিধারা, ঢাকা। ২০১২।