চরামদ্দির চৌধুরী পরিবার

Barisalpedia থেকে

চরামদ্দির চৌধুরী পরিবার দক্ষিণ বাংলার বিখ্যাত মুসলিম জমিদার পরিবারের একটি। তৎকালীন বরিশালের পশ্চাৎপদ মুসলিম সমাজকে শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রসর করে তুলতে এ পরিবারের ভূমিকা ব্যাপক।


জমিদারি প্রতিষ্ঠা

সুগন্ধিয়ার সর্দারদের পূর্ব পুরুষ শ্রাবণ ঠাকুরের পুত্র মুসলমান হয়ে আহম্মদ নাম ধারণ করে। আহম্মদের নামে স্থানের নাম চর আহম্মদিয়া হয়। চর আহম্মদিয়া রূপান্তরিত হয়ে চরামদ্দি হয়েছে। চৌধুরীদের পূর্বে দাউদ শাহের মাজারের জন্য চরামদ্দি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছিল। চরামদ্দির চৌধুরীদের পূর্ব পুরুষ ইঙ্গা খান ও মুঙ্গা খান দু’ভাই ফরিদপুর জেলার রবিপুর হতে চরামদ্দি গ্রামে আগমন করেন। কথিত আছে তারা দু’ভাই গুড়ের ব্যবসা করতেন। একদিন তারা ঝালকাঠির নদীর কূলে অনেক স্বর্ণ, রৌপ্য পান এবং তা দিয়ে ভূমি ক্রয় করেন। এভাবে এই পরিবারের জমিদারি প্রতিষ্ঠিত হয়।


বংশ লতিকা

মুঙ্গা খানের পুত্র আবদুর রশিদ খান, তার পুত্র আরমানী আলী খান, তার পুত্র আছমত আলী খান, তার পুত্র ইসমাইল চৌধুরী, তার দুই পুত্র শাহজাহান ও আলমগীর।


জমিদারির প্রসার

মুঙ্গা খানের পুত্র রশিদ খান কয়েকটি তালুক ক্রয় করেন। তার পুত্র আরমান আলী খান সিপাহী যুদ্ধের সময় বাকেরগঞ্জে একজন উদীয়মান ভূস্বামী ছিলেন। আরমান আলীর পুত্র আছমত আলী খান ১৮৬৮ খৃৃস্টাব্দে জেলার একজন বিখ্যাত জমিদার ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের কুরশী নিবাসী সৈয়দ মকবুলের কন্যা ওয়াজেদুন নেসাকে বিয়ে করেন। উড়িষ্যার কটক ও ফরিদপুরে তার জমিদারী ছিল।


কীর্তিমানগণ

আরমান আলী খান ও আছমত আলী খান চন্দ্রদ্বীপ, আজিমপুর, শাহজাদপুর প্রভৃতি পরগণার জমিদারী অংশ ক্রয় করেন। আছমত আলীর পুত্র ইসমাইল খান ১৮৭৪ ক্রিস্টাব্দের ১৪ আগষ্ট কটকে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৪ খৃস্টাব্দে তিনি পৌরসভার পক্ষ থেকে বঙ্গীয় আইনসভার এবং ১৯১৯ খৃৃস্টাব্দে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পরবর্তীতে চৌধুরী পদবি গ্রহণ করেন। তার স্ত্রীর নামে তিনি বরিশাল শহরে হালিমা খাতুন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার পুত্র শাহজাহান চৌধুরী ১৯১৭ সালের ২১ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খ-)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।