চন্দ্রদ্বীপে সংস্কৃত ভাষা চর্চা

Barisalpedia থেকে

বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ সংস্কৃত ভাষা চর্চার অন্যতম পীঠস্থান ছিল। বাকলার সংস্কৃত পন্ডিতগণ বঙ্গ বিখ্যাত ছিল। সংস্কৃত পন্ডিতদের মধ্যে ত্রিলোচন দাম, রূপসনাতন, জীব গোস্বামী, জানকী নাথ ও মধুসূদনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিজয় গুপ্তের মাতুল ত্রিলোচন দাশ পনেরো শতকের প্রথম ভাগে ফুল্লশ্রী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার ভগ্নি রুক্ষ্মিণী বিজয় গুপ্তের মাতা। ত্রিলোচন ফুল্লশ্রী গ্রামে শিক্ষালাভ করে কবিন্দ্র উপাধি লাভ করেন। তার পুরোহিত রামটুরী চক্রবর্তী ও পিতা হেরম্ব চন্দ্র ফুল্লশ্রীতে বসতি স্থাপন করেন। সিহিপাশার ডিংসাই বংশের আদি পুরুষ রামটুরী চক্রবর্তী। ত্রিলোচন দাশ সংস্কৃত ভাষায় কয়েকখানি গ্রন্থ রচনা করেন। কলাপ ব্যাকরণের টীকা নিয়ে তার লেখা ‘কাতন্ত্রবৃত্তি পঞ্জিকা’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার পুত্র জানকী নাথ একজন বিখ্যাত নৈয়ায়িক ছিলেন। জানকী নাথ পঞ্চদশ শতকে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ন্যায় সিদ্ধান্ত মঞ্জরী ও আন্বীক্ষিকীতত্ত্ব বিবরণ জানকি ণাথ রচিত। প্রথম গ্রন্থে তিনি স্বরচিত মনিমরীচি ও তাৎপর্যদীপিকার উল্লেখ করেছেন। তার শিষ্য কলাদ তর্কবাগীশের ভাষারত্ন ও তত্ত্বচিন্তামণির অনুমান খন্ডের টীকা রচনা করেছেন। জানকী নাথের পুত্র ভবানী নাথ সার্বভৌম ও পৌত্র রঘুনাম কবিকন্ঠ বরণ ও রঘুরাম দাশ কবিকন্ঠ পান্ডিত্য গৌরবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। ষোল শতকের প্রথম ভাগে মধুসূদন সরস্বতী কোটালীপাড়ার উপশিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ফুল্লশ্রীতে বিদ্যার্জন করেন। তিনি বারোখানা গ্রন্থ রচনা করেন। তার গ্রন্থের মধ্যে অদ্বৈতসিদ্ধি, প্রস্থান ভেদ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তিনি একজন বিখ্যাত বেদান্ত দার্শনিক ছিলেন এবং আকবরের রাজসভায় সম্মানিত হয়েছিলেন।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।