ঘুইঙ্গারহাট যুদ্ধ, ভোলা, ১৯৭১
ভোলা থেকে ৫ মাইল দক্ষিণে ঘুইঙ্গারহাট। পাকবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য ঘুইঙ্গারহাটে ১০টি বাংকার খনন করা হয়। ২৭ অক্টোবর পাকবাহিনী লঞ্চে বাগমারা এসে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একদল বাংলাবাজার যায় আর একটি দল ঘুইঙ্গারহাট যায়। ঘুইঙ্গারহাট সংলগ্ন শরৎ ডাক্তারের বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প, কমান্ডার ফারুক বাচ্চু। ২৭ অক্টোবর তিনি কয়েকজনকে পাহারায় রেখে ক্যাম্পে চলে যান। তিনি কমান্ডার আলী আকবরের নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু কোনো নির্দেশ আসেনি। পাকবাহিনী ছদ্মবেশে রাজাকারদের নিয়ে ঘুইঙ্গারহাটে পৌঁছে। তারা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ধরে ফেলে। খবর পেয়ে ফারুক বাচ্চু মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেনের নেতৃত্বে ৫০ জনের একদি দল হাটে পাঠালেন। পাকবাহিনী বাগানে পালিয়ে ছিল। মনিরের দল কাছে এলে পাকসেনারা গুলিবর্ষণ করে এবং মনির ও শামসুদ্দিন ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করে। ডা. আবুল বাশারসহ কয়েকজন আহত হন। পরে বৈঠক করে মুক্তিযোদ্ধারা পাঁচভাগে বিভক্ত হয়ে চারদিক থেকে পাক আর্মিকে আক্রমণ করে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গোলাগুলি চলে। এক ফাঁকে পাকবাহিনীর অনেকে গাড়িতে পালিয়ে যায়। ১৫ জন পাক সৈন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তারা ধরা পড়ে এবং অনেকে নিহত হয়। আস্তে আস্তে জনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সম্পূর্ণ হাট মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। ঘুইঙ্গারহাট যুদ্ধে শহীদ হলেন: ১. মনিরুল এসলাম এলএমজি চালক ২. আবদুল মান্নান ৩. চাপরাশী ৪. দিলীপ ৫. শামসুদ্দিন ৬. খলিলুর রহমান ৭. উত্তম
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।