খান বাড়ি মসজিদ, আমিরাবাদ, নলছিটি

Barisalpedia থেকে

ঝালকাঠি জিলার পূর্ব প্রান্তে, বরিশাল- ঝালকাঠি মহাসড়কের উত্তর পার্শ্বের আমিরাবাদ গ্রামের এই ধর্মীয় স্থাপনাটির ইতিহাস বিচিত্র। বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে আসমান সিংহের পালা অত্যন্ত জনপ্রিয় পালাগান হিসেবে চিহ্নিত। এই লোকগীতির আখ্যানভাগ নলছিটি অঞ্চলের একটি করুন প্রেমকাহিনীকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে। তদানীন্তন বাকেরগঞ্জ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এবং বিখ্যাত ইতিহাসবিদ এইচ . বেভারেজ তার দি ডিষ্ট্রিক্ট অফ বরিশাল গ্রন্থেও এই কাহিনীর উল্লেখ করেছেন। সেই কাহিনীতে বলা হয়েছে যে, সুজাবাদ এলাকার জনৈক আসমান সিং তার অবিশ্বস্ত স্ত্রীর অবৈধ প্রণয় এবং তার গৃহে নিয়মিত খোদা নওয়াজ খানের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর দ্রুত বাড়ি ফিরে আসে। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য আসমান সিং খোলা তরবারি নিয়ে নিজ গৃহে করাঘাত করায় তার স্ত্রী দুর্গা অসুস্থতার ভান করে প্রেমিককে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে আসমান সিং স্ত্রী দুর্গাকে আঘাত করে। দূর্ভাগ্যক্রমে লক্ষ্যভ্রষ্ট সেই আঘাতে দুর্গার কোলে থাকা তাদের কন্যা সন্তান প্রানত্যাগ করে। হত্যার অভিযোগে আসমান সিং গ্রেফতার হয় এবং বিচারে তার ফাঁসি হয়। শ্র“তি অনুসারে এই ঘটনার পর খোদা নেওয়াজ খানের মানসিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হতে থাকে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বর্ণিত প্রেম কাহিনীর খলনায়ক খোদা নেওয়াজ খান আমিরাবাদ এলাকায় এই মসজিদটি নির্মাণ করে ধর্ম-কর্মে গভীরভাবে মনোনিবেশ করে। খোদা নেওয়াজ থান প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদটি পরবর্তীকালে খান বাড়ির মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে।


তথ্যসূত্র: সাইফুল আহসান বুলবুল। বৃহত্তর বরিশালের ঐতিহাসিক নিদর্শন। গতিধারা, ঢাকা। ২০১২।