কুতুব শাহ

Barisalpedia থেকে

যরত সৈয়দ কুতুব শাহ্ বরিশালের পীর-আউলিয়াদের মধ্যে সবচেয়ে সুপরিচিত। তিনি স¤্রাট জাহাঙ্গীরের উজির উল্ফৎ গাজীর পুত্র ছিলেন। তিনি স¤্রাট জাহাঙ্গীরের নিকট হতে সরকার বাকলায় নাজিরপুর পরগণায় জমিদারী লাভ করেন।

সৈয়দ কুতুবশাহ্ মুলাদী থানার তেরচরে প্রথম বসতি স্থাপন করে। তিনি বরিশাল, মাদারীপুর ও বাগেরহাটে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন। তিনি অনেক দীঘি খনন ও মসজিদ নির্মাণ করেন। তেরচরে কুতুব শাহের এক বিরাট দীঘি ছিল। দীঘিটি আড়িয়াল খাঁ নদে বিলীন হয়েছে। তেরচর নদী ভাঙ্গনের সম্মুখীন হলে সৈয়দ কুতুবশাহ্ নলচিড়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। ছবি খাঁ তার সমকালীন। তিনি কুতুব শাহের গুণে মুগ্ধ হয়ে তাকে লাখেরাজ সম্পত্তি প্রদান করেন।

কথিত আছে কুতুব শাহ জীবন্ত কবর নিয়েছেন। তিনি প্রত্যেক বৃহস্পতিবার পুত্রের সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং এক গ্লাস দুধ পান করে যেতেন। কিন্তু এক বৃহস্পতিবার কুতুব শাহ্ আর দুধ খেতে এলেন না। এক আগন্তুক এসে কুতুব শাহের পুত্রের নিকট দুধ পান করে মারা যান এবং তাকে কুতুব শাহের পাশে সমাহিত করা হয়। পুত্র রাতে স্বপ্ন দেখলেন যে, পিতা কুতুব শাহ্ আর কোনোদিন ফিরে আসবেন না। কারণ তিনি তার আকাক্সিক্ষত বন্ধুকে পেয়েছেন। কুতুব শাহ্ নলচিড়া মিয়াবাড়ীতে একটি মসজিদ নির্মাণ ও দীঘি খনন করেন। তিনি কৃষ্ণ পাথরে হজরত মুহম্মদের পায়ের ছাপ বা কদমরসুল রেখে গেছেন। তার সময়ের পাথরে খোদাই কলেমা তৈয়ব ও হাতের লেখা একখান কোরান শরীফ আছে। কোরান শরীফখানা মিয়াবাড়ীর একটি সিন্দুকে রক্ষিত আছে। প্রত্যেক বছর ফালগুনের পূর্ণিমায় মাজারে মেলা ও উরস অনুষ্ঠিত হয়।

কুতুব শাহের জন্ম-মৃত্যুর তারিখ অজ্ঞাত।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।