কুতুব উদ্দিন, কমান্ডার

Barisalpedia থেকে

কমান্ডার কুতুব উদ্দিনের জন্ম ৯ মে ১৯৫১। পিতা সামসুদ্দিন হাওলাদার, মাতা আনজুমনারা বেগম, গ্রাম আলিমাবাদ, ইউনিয়ন বাটামারা, থানা মুলাদী। ১৯৬৫ সালে মুলাদী হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে ঢাকার জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন এবং বিএ পাস করেন। ১৯৬৮ সালে পিআইএ-তে চাকরি গ্রহণ করে করাচী চলে যান। ১৯৭১ সালে অসহযোগ আন্দোলনকালে করাচী থেকে বরিশাল চলে আসেন। মুলাদীতে ট্রেনিং গ্রহণ করে বরিশালে প্রশিক্ষণ নেন। বরিশালের পতনের পর ভারতে চলে যান। ট্রেনিং গ্রহণ করে অস্ত্র নিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর গৌরনদী চলে আসেন। তিনি প্রথম নলচিড়া মিয়াবাড়িতে ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তার ক্যাম্প শরিকল হাইস্কুল, নলচিড়া রায়ের বাড়ি, বাটাজোর, টরকী প্রভৃতি স্থানান্তর করেন। কৌশলগত কারণে একই স্থানে ক্যাম্প থাকত না। ২৮ সেপ্টেম্বর কুতুব উদ্দিন বরিশাল উত্তর মহকুমার এসডিও খাজা আহমেদের লঞ্চ আক্রমণ করেন। লঞ্চে ডিএসপি জনাব আলী পুলিশ ও রাজাকারদের নিয়ে গৌরনদীতে পাকবাহিনীর ক্যাম্পে রসদ দিয়ে বরিশাল ফিরছিল। লঞ্চে অবস্থনরত পুলিশ ও রাজাকাররা মুক্তিবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। উভয় পক্ষের গুলি বর্ষণ কালে এসডিও খাজা আহমেদ এবং ডিএসপি জনাব আলী নিহত হন। মুক্তিবাহিনী অস্ত্রসহ লঞ্চ দখল করে নেয়। কুতুব বাহিনী মুলাদী ও গৌরনদীতে কয়েকটি যুদ্ধ করে। মাহিলারা ব্রিজের যুদ্ধে তারা ৪ জন পাকসেনাকে গ্রেফতার করে লনলচিড়ায় এনে মৃত্যুদ- প্রদান করে। কমান্ডার কুতুব উদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর মুলাদী থানা আক্রমণ করে। তাঁর সাথে ছিল মুক্তিযোদ্ধা তাহের, মন্নান, ফরিদ উদ্দিন, মোস্তফা, মনসুর প্রমুখ। প্রচ- যুদ্ধের পর থানার পুলিশ, রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। পাকবাহিনী বার বার চেষ্টা করে মুলাদী থানা পুনঃদখল করতে পারেনি। ৮ অক্টোবর বাংলাদেশে মুলাদী থানা প্রথম মুক্ত হয়। কমান্ডার কুতুব উদ্দিন ও নিজামউদ্দিন ৮ ডিসেম্বর বরিশাল শহরে বিজয়ী বেশে প্রবেশ করেন। তাঁরা পাকবাহিনীর ওয়াপদা ক্যান্টনমেন্ট দখল করেন। তাঁদের কাছে পাকবাহিনীর ক্যাপ্টেন কাহার আত্মসমর্পণ করে। কুতুব উদ্দিন ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।