কলসকাঠি গণহত্যা, মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১

Barisalpedia থেকে

কলসকাঠি বাকেরগঞ্জ থানায় অবস্থিত। কলসকাঠির আওরঙ্গপুর পরগনায় জমিদার বংশ বিখ্যাত। ১৯৫০-এর দাঙ্গা ও ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পর কলসকাঠির জমিদার ও কুলীন সম্প্রদায় ভারতে চলে যায়। ২৫ এপ্রিল বরিশাল শহরের পতন হয়। পাকবাহিনী গ্রামে গ্রামে গণহত্যা চালাচ্ছে। কলসকাঠি হিন্দুপ্রধান এলাকা। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দুরা এখানে আশ্রয় নেয়। রাজাকার ও শান্তি কমিটির সহায়তায় পাকবাহিনী কলসকাঠি আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। ১৯৭১ সালের ১৪ মে শুক্রবার ১৩৭৮ বাংলা সালের ৩০ বৈশাখ পাকবাহিনী নদীবেষ্টিত কলসকাঠি গ্রাম তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। সকাল ৯টায় অগ্নিসংযোগ, হত্যাকা- ও নারী নির্যাতন শুরু হয়। তারা কলসকাঠির চালবাজার সংলগ্ন খাল পারে লাইনে দাঁড় করিয়ে পাকবাহিনী ঐদিন মোট ৮৭ জনকে হত্যা করেছিল। কলসকাঠি বিএম একাডেমীর ১১ জন কিশোর ছাত্রকে হত্যা করে তুলাতলা নদীতে ফেলে দেয়। বরিশালের প্রখ্যাত উকিল শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার ভাই বরিশাল মহিলা কলেজের কর্মচারী রমণীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় কলসকাঠিতে আশ্রয় নিয়েছিল। অতি বৃদ্ধ দেখে দু’ভাইকে ছেড়ে দেয়। কলসকাঠিতে ২০০৫ সালে নির্মিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ৫২ জন শহীদের নাম লেখা আছ। ১. দুলাল কর্মকার ২. নগেন কর্মকার ৩. কুট্টি কর্মকার ৪. নগেন কর্মকার ৫. রমেশ কর্মকার ৬. সন্তোষ কর্মকার ৭. শংকর কাঞ্জি লাল ৮. চন্দন চক্রবর্তী ৯. ক্ষিরোদ চন্দ্র ১০. খোকন কুমার দাশ ১১. দুলাল চন্দ্র দাশ ১২. বলরাম রজব দাশ ১৩. আনন্দ নট্ট ১৪. অমূল্য পাল ১৫. নীল মাধব পাল ১৬. গণেশ পাল ১৭. গুলিনাথ পাল ১৮. চন্দন পাল ১৯. দিলীপ পাল ২০. দেবীন্দ্র পাল ২১. দেবেন্দ্র পাল ২২. কর্মকান্ত পাল ২৩. মহেন্দ্র পাল ২৪. মানিক পাল ২৫. বসন্ত পাল ২৬. রাজেন্দ্র পাল ২৭. রাধাচরণ পাল ২৮. শ্রীরাম পাল ২৯. শশী কান্ত পাল ৩০. রাখাল বিশ্বাস ৩১. নরোত্তম বৈষ্ণব ৩২. বিজিন্দ্র বৈষ্ণব ৩৩. গণেশ ভূঞ্জ মালী ৩৪. অশ্বিনী মালাকার ৩৫. গোপাল মিস্ত্রি ৩৬. রমেশ মিস্ত্রি ৩৭. কৈলাশ সিদার ৩৮. অক্ষয় শীল ৩৯. শরৎচন্দ্র শীল ৪০. ভবরঞ্জন শীল ৪১. কালীপদ সরকার ৪২. অশোক সাহা ৪৩. কালাচাঁদ সাহা ৪৪. সকাশ চন্দ্র সাহা ৪৫. পরিমল চন্দ্র সাহা ৪৬. মুকুন্দ লাল সেন ৪৭. বাদল কুমার সেন ৪৮. যোগেন্দ্র লাল সেন ৪৯. রণজিত কুমার হাজরা ৫০. অমৃত লাল হালদার ৫১. দুলাল হালদার ৫২. অমরী ঘোষ।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।