"কলসকাঠি"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
("বাকেরগঞ্জ থানার একটি গ্রাম। কলসকাঠি গ্রামে আওরঙ্গপুর পর..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
 
বাকেরগঞ্জ থানার একটি গ্রাম। কলসকাঠি গ্রামে আওরঙ্গপুর পরগণার জমিদারদের বাস ছিল, যারা কলসকাঠির জমিদার বলে খ্যাত।  
 
বাকেরগঞ্জ থানার একটি গ্রাম। কলসকাঠি গ্রামে আওরঙ্গপুর পরগণার জমিদারদের বাস ছিল, যারা কলসকাঠির জমিদার বলে খ্যাত।  
  
জমিদার জানকী বল্লভ গারুরিয়ার পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করে কলসকাঠি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তার বংশধররা প্রতাপশালী জমিদার ছিল। কলসকাঠিতে আগমনের পর তিনি এই অঞ্চলে বিভিন্ন ইমারতসহ বেশ কয়েকটি মন্দির এবং বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সকল বিগ্রহের মধ্যে নীলমাধব নামের বিগ্রহ উল্লেখযোগ্য। এই বিগ্রহ জানকী বল্লভের পরিবারে কুলদেবতা হিসেবে পূজিত হওয়ার কথা জানা যায়। এই পরিবারের অন্যতম সদস্য বরদাকান্ত কলসকাঠিতে গণেশ পূজা উপলক্ষে মেলার আয়োজন করেন বলে জানা যায়।  তাঁদের চেষ্টায় ১৮৮২ খৃৃস্টাব্দে কলসকাঠি বিএম হাইস্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। এখান প্রতি বছর গণেশ পূজা উপলক্ষে মেলা বসে।
+
জমিদার জানকী বল্লভ গারুরিয়ার পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করে কলসকাঠি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তার বংশধররা প্রতাপশালী জমিদার ছিল। কলসকাঠিতে আগমনের পর তিনি এই অঞ্চলে বিভিন্ন ইমারতসহ বেশ কয়েকটি মন্দির এবং বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সকল বিগ্রহের মধ্যে নীলমাধব নামের বিগ্রহ উল্লেখযোগ্য। এই বিগ্রহ জানকী বল্লভের পরিবারে কুলদেবতা হিসেবে পূজিত হওয়ার কথা জানা যায়। এই পরিবারের অন্যতম সদস্য বরদাকান্ত কলসকাঠিতে গণেশ পূজা উপলক্ষে মেলার আয়োজন করেন বলে জানা যায়।  তাঁদের চেষ্টায় ১৮৮২ খৃৃস্টাব্দে কলসকাঠি বিএম হাইস্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।  
 +
 
 
এখানে স্বাধীনতা যুদ্ধ কালে পাকিস্তানি বাহিনী এক নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালায়। ১৯৭১ সালের ১৪ মে শুক্রবার ১৩৭৮ বাংলা সালের ৩০ বৈশাখ পাকবাহিনী নদীবেষ্টিত কলসকাঠি গ্রাম তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। সকাল ৯টায় অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাÐ ও নারী নির্যাতন শুরু হয়। তারা কলসকাঠির চালবাজার সংলগ্ন খাল পারে লাইনে দাঁড় করিয়ে ঐদিন মোট ৮৭ জনকে হত্যা করেছিল। কলসকাঠি বিএম একাডেমীর ১১ জন কিশোর ছাত্রকে হত্যা করে তুলাতলা নদীতে ফেলে দেয়। বরিশালের প্রখ্যাত উকিল শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার ভাই বরিশাল মহিলা কলেজের কর্মচারী রমণীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় কলসকাঠিতে আশ্রয় নিয়েছিল। অতি বৃদ্ধ দেখে দু’ভাইকে ছেড়ে দেয়। কলসকাঠিতে ২০০৫ সালে নির্মিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ৫২ জন শহীদের নাম লেখা আছ।
 
এখানে স্বাধীনতা যুদ্ধ কালে পাকিস্তানি বাহিনী এক নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালায়। ১৯৭১ সালের ১৪ মে শুক্রবার ১৩৭৮ বাংলা সালের ৩০ বৈশাখ পাকবাহিনী নদীবেষ্টিত কলসকাঠি গ্রাম তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। সকাল ৯টায় অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাÐ ও নারী নির্যাতন শুরু হয়। তারা কলসকাঠির চালবাজার সংলগ্ন খাল পারে লাইনে দাঁড় করিয়ে ঐদিন মোট ৮৭ জনকে হত্যা করেছিল। কলসকাঠি বিএম একাডেমীর ১১ জন কিশোর ছাত্রকে হত্যা করে তুলাতলা নদীতে ফেলে দেয়। বরিশালের প্রখ্যাত উকিল শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার ভাই বরিশাল মহিলা কলেজের কর্মচারী রমণীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় কলসকাঠিতে আশ্রয় নিয়েছিল। অতি বৃদ্ধ দেখে দু’ভাইকে ছেড়ে দেয়। কলসকাঠিতে ২০০৫ সালে নির্মিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ৫২ জন শহীদের নাম লেখা আছ।
  
 
----
 
----
 
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খÐ)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।
 
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খÐ)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।

১১:২৭, ৩ আগস্ট ২০২০ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ

বাকেরগঞ্জ থানার একটি গ্রাম। কলসকাঠি গ্রামে আওরঙ্গপুর পরগণার জমিদারদের বাস ছিল, যারা কলসকাঠির জমিদার বলে খ্যাত।

জমিদার জানকী বল্লভ গারুরিয়ার পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করে কলসকাঠি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তার বংশধররা প্রতাপশালী জমিদার ছিল। কলসকাঠিতে আগমনের পর তিনি এই অঞ্চলে বিভিন্ন ইমারতসহ বেশ কয়েকটি মন্দির এবং বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সকল বিগ্রহের মধ্যে নীলমাধব নামের বিগ্রহ উল্লেখযোগ্য। এই বিগ্রহ জানকী বল্লভের পরিবারে কুলদেবতা হিসেবে পূজিত হওয়ার কথা জানা যায়। এই পরিবারের অন্যতম সদস্য বরদাকান্ত কলসকাঠিতে গণেশ পূজা উপলক্ষে মেলার আয়োজন করেন বলে জানা যায়। তাঁদের চেষ্টায় ১৮৮২ খৃৃস্টাব্দে কলসকাঠি বিএম হাইস্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।

এখানে স্বাধীনতা যুদ্ধ কালে পাকিস্তানি বাহিনী এক নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালায়। ১৯৭১ সালের ১৪ মে শুক্রবার ১৩৭৮ বাংলা সালের ৩০ বৈশাখ পাকবাহিনী নদীবেষ্টিত কলসকাঠি গ্রাম তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। সকাল ৯টায় অগ্নিসংযোগ, হত্যাকাÐ ও নারী নির্যাতন শুরু হয়। তারা কলসকাঠির চালবাজার সংলগ্ন খাল পারে লাইনে দাঁড় করিয়ে ঐদিন মোট ৮৭ জনকে হত্যা করেছিল। কলসকাঠি বিএম একাডেমীর ১১ জন কিশোর ছাত্রকে হত্যা করে তুলাতলা নদীতে ফেলে দেয়। বরিশালের প্রখ্যাত উকিল শ্যামাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার ভাই বরিশাল মহিলা কলেজের কর্মচারী রমণীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় কলসকাঠিতে আশ্রয় নিয়েছিল। অতি বৃদ্ধ দেখে দু’ভাইকে ছেড়ে দেয়। কলসকাঠিতে ২০০৫ সালে নির্মিত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ৫২ জন শহীদের নাম লেখা আছ।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খÐ)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।