কড়াপুরের মিয়া পরিবার

Barisalpedia থেকে

বরিশাল শহরের অদূরে কড়াপুরের মিয়া পরিবার চন্দ্রদ্বীপের রাজপরিবারের অনুগ্রহ লাভকারী এক ঐতিহ্যবাহী পরিবার। এঁদের জমিদারি ছিল চন্দ্রদ্বীপ পরগণায়। ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামেও এই পরিবারের বিশেষ ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে।

মালদার খাঁ ও হায়াত মাহমুদ চন্দ্রদ্বীপ রাজার সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। মালদার খাঁ হায়াত মাহমুদের পিতা হতে পারেন। কথিত আছে একবার চন্দ্রদ্বীপ রাজাকে বন্দী করা হয়। হায়াত মাহমুদ বীরত্বের সাথে রাজাকে মুক্ত করে আনেন। খুব সম্ভব চন্দ্রদ্বীপ রাজাকে চাখারের মজমুদার ও মীর পরিবার বন্দী করে নিয়ে যায়। হায়াত মাহমুদ রাতের অন্ধকারে রাজাকে মুক্ত করে আনেন। রাজা তাকে সন্তুষ্ট হয়ে দুটি তালুক-জোয়ার মালদার খাঁ ও হায়াত মাহমুদ প্রদান করেন। তৌজি ১৭৪৭ ও ১৭৪৮ খারিজা তালুক হিসেবে হায়াত মাহমুদের বংশদরদের দখলে ছিল। পরগণা বুজুর্গ উমেদপুরেও হায়াত মাহমুদের তালুক ছিল।

হায়াত মাহমুদ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। তাকে ১৭৮৫ খৃৃস্টাব্দে বন্দী করা হয়। ঢাকার নায়েব নাজিম হায়াত মাহমুদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। তাকে প্রিন্স অব ওয়েলস দ্বীপে আটক করে রাখা হয়। ১৮০৫ খৃৃস্টাব্দে তিনি মুক্তি লাভ করেন। কোম্পানি তার বুজুর্গ উমেদপুরের তালুক কেড়ে নেয়। হায়াত মাহমুদ ৩০ একর ভূমির ওপর তার বাসগৃহ নির্মাণ করেন। তিনি একটি দোতলা মসজিদ নির্মাণ এবং ৪ একর ও ৩ একর আয়তরেন দু’টি দীঘি খনন করেন। তার ৪০০ একর লাখেরাজ ভূমি ছিল।

হায়াত মাহমুদের বংশলতিকা: মালদার খাঁর পুত্র হায়াত মাহমুদ, তদীয় পুত্র মাহমুদ জাকির, তদীয় পুত্র মাহমুদ মনির, তদীয় পুত্র মিয়া আহসান আলী, তদীয় পুত্র মিয়া নওয়াব আলী, তদীয় পুত্র মিয়া রহম আলী, তদীয় পুত্র মিয়া আহমেদ আলী এবং তদীয় পুত্র আব্দুল মান্নান মিয়া।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।