কংগ্রেস পার্টি, বরিশাল

Barisalpedia থেকে
বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে বরিশালের কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা পালন করেছেন। 

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবী যুবকেরা কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে গান্ধীর আহ্বানে কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগষ্ট কংগ্রেসের আহ্বানে ভারত ছাড় Quit India আন্দোলন শুরু হয়।

বরিশাল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন উকিল নগেন্দ্র বিজয় ভট্টাচার্য এবং সম্পাদক ছিলেন সতীন্দ্রনাথ সেন। কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন শরৎ চন্দ্র গুহ উকিল, শরৎ ঘোষ, মনোরঞ্জন গুপ্ত, সরল কুমার দত্ত, অবনীনাথ ঘোষ উকিল, সুরেশ চন্দ্র গুপ্ত, দুর্গামোহন সেন, কামিনী কুমার গঙ্গোপাধ্যায়, কদোরনাথ সমাদ্দার, সুরেন্দ্রনাথ দত্ত, নগেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, ইন্দুমতি গুহঠাকুরতা, নকুলেশ্বর গুপ্ত, জিতেন্দ্র মোহন দত্ত, শান্তিসুধা ঘোষ, প্রাণকুমার সেন, মনোজ কুমার কাহালী, অরুণ চন্দ্র গুহ, নুর আহম্মেদ প্রমুখ। বিএম কলেজের অধ্যাপিকা শান্তি সুধা গোষ ও অধ্যাপক প্রফুল্ল রঞ্জন চক্রবর্তী ছাত্রদের নিয়ে বরিশালে ভারত ছাড় আন্দোলন শুরু করেন। কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছিল-ছাত্র কংগ্রেস। ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র কংগ্রেস অংশগ্রহণ করে। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর ইংরেজ সরকার শান্তি সুধা ঘোষ ও অধ্যাপক প্রফুল্ল রঞ্জন চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে। ভারত ছাড় বা আগষ্ট আন্দোলনে শরৎ কুমার ঘোষ, নিশিকান্ত গাঙ্গুলী, অশ্বিনীকুমার গাঙ্গুলী, জিতেন্দ্রনাথ কুশারী, অরুণ চন্দ্র গুহ, মনোরঞ্জন গুপ্ত, কেদারনাথ সমাদ্দার, নগেন্দ্র বিজয় ভট্টাচার্য, সতীন সেন, সুরেশ চন্দ্র গুপ্ত, সুধীন্দ্রনাথ ঘোষ, মনোজ কুমার কাহালী, মনিলাল সেন, সরল কুমার দত্ত, আজিজ হাওলাদার, নুরুল হাওলাদার, নুরুল ইসলাম খান, মুহাম্মদ হোসেন, রামদাস প্রমুখ গ্রেফতার হন।

গ্রামে গ্রামে গান্ধী আশ্রম গড়ে ওঠে। গান্ধী আশ্রম ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দীক্ষাকেন্দ্র। ভোলার বাপ্তা গ্রামে সরযু বালা প্রতিষ্ঠিত গান্ধী আশ্রম বিজয় ল²ী পÐিত, ফুলরেণু গুহ, ডাঃ মৈত্রেয়ী বসু প্রমুখ পরিদর্শন করেন। বরিশাল নারী সমাজ ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে অংশ নেয়। নির্মলা সেন, হাসি সেন, মায়া গুপ্ত, ইন্দুমতি গুহঠাকুরতা, মানদা আইচ প্রমুখ হিন্দু ধর্মীয় অধিকারের সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দিেেয় কারাবরণ করেন। বিপ্লবী কর্মীরা রহমতপুর ও ধামুড়া পোষ্ট অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। সমগ্র জেলায় কয়েক শ’ কংগ্রেস কর্মী কারাবরণ করেন। মনোরঞ্জন গুপ্ত জেলে আবদ্ধ অবস্থায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের পর কংগ্রেস কর্মীরা জেল হতে মুক্তি লাভ করে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে বরিশালে কংগ্রেস রাজনীতির অবসান হয়।


তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (প্রথম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।