"আহসান হাবীব"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Barisalpedia থেকে
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
 
[[চিত্র:আহসান_হাবীব.jpg]]
 
[[চিত্র:আহসান_হাবীব.jpg]]
  
জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯১৭। মৃত্যু ১০ জুলাই ১৯৮৫। জন্মস্থান পিরোজপুর। আর্থিক কারণে কলেজের পড়া ছেড়ে ১৯৩৭ খ্রি. কলকাতায এসে ‘দৈনিক তকবীর’ পত্রিকার সহ-সম্পাদকের পদে নিযুক্ত হন। এ সময় থেকেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা প্রকাশ করতে থাকেন। সাহিত্য-সম্পাদক হিসাবে নানান পত্রিকায় কাজ করেছেন। তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘রাত্রিশেষ’। অন্যান্য গ্রন্থ: ‘ছায়া হরিণ’, ‘আমায় বসতি’, ‘মেঘ বলে চৈত্রে যাবো’, ‘দুই হাতে দুই আদিম পাথর’, ‘প্রেমের কবিতা’, এবং ‘বিদীর্ণ দর্পনে’। এ ছাড়াও তাঁর গল্প, উপন্যাস ও ছোটোদের জন্য রচনাবলি আছে। কবিতার জন্য বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্র পুরস্কার সবই তিনি পেয়েছেন।
+
আহসান হাবীব (জন্ম: ২ জানুয়ারি, ১৯১৭ - মৃত্যু: ১০ জুলাই, ১৯৮৫) (ইংরেজি: Ahsan Habib) একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশী কবি ও সাহিত্যিক। দীর্ঘ দিন দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদের দায়িত্ব পালন সূত্রে তিনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে অভিভাবকের ভূমিকা রেখেছেন। তিনি পঞ্চাশ দশকের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি হিসেবে পরিগণিত।
 +
 
 +
 
 +
== জন্ম ও শিক্ষাজীবন ==
 +
 
 +
আহসান হাবীবের জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পিরোজপুরের শংকরপাশা গ্রামে৷ পিতার নাম হামিজুদ্দীন হাওলাদার৷ মাতা জমিলা খাতুন৷ তাঁর পাঁচ ভাই ও চার বোন৷ অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল পিতা মাতার প্রথম সন্তান তিনি৷ পারিবারিক ভাবে আহসান হাবীব সাহিত্য সংস্কৃতির আবহের মধ্যে বড় হয়েছেন৷ সেই সূত্রে বাল্যকাল থেকেই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি৷ সেইসময় তাঁর বাড়িতে ছিল আধুনিক সাহিত্যের বইপত্র ও কিছু পুঁথি৷ যেমন আনোয়ারা, মনোয়ারা, মিলন মন্দির প্রভৃতি৷ এসব পড়তে পড়তে একসময় নিজেই কিছু লেখার তাগিদ অনুভব করেন৷ সাহিত্যের অনুকূল পরিবেশ নিয়ে পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ১৯৩৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷ এরপর তিনি চলে আসেন বরিশালে৷ ভর্তি হন সেখানকার বিখ্যাত বিএম কলেজে৷ কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কলেজের পড়াশোনার পাঠ শেষ পর্যন্ত অসমাপ্ত রাখতে হয় তাঁকে৷ বিএম কলেজে দেড় বছর পড়ার পর ১৯৩৬ সালের শেষার্ধে কাজের খোঁজে তিনি রাজধানী কলকাতায় পাড়ি জমান৷ এভাবেই কবি আহসান হাবীবের বরিশাল থেকে তত্‍কালীন রাজধানী কলকাতায় পদার্পণ৷
 +
 
 +
== কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবন ==
 +
 
 +
আহসান হাবীব ১৯৪৭ সালের ২১ জুন বিয়ে করেন বগুড়া শহরের কাটনারপাড়া নিবাসী মহসীন আলী মিয়ার কন্যা সুফিয়া খাতুনকে। আহসান হাবীব দুই কন্যা (কেয়া চৌধুরী ও জোহরা নাসরীন) ও দুই পুত্রের (মঈনুল আহসান সাবের ও মনজুরুল আহসান জাবের) জনক ছিলেন। পুত্র মঈনুল আহসান সাবের একজন স্বনামখ্যাত বাংলা ঔপন্যাসিক।
 +
১২/১৩ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময়ই ১৯৩৩ সালে স্কুল ম্যাগাজিনে তাঁর একটি প্রবন্ধ ধরম প্রকাশিত হয়৷ ১৯৩৪ সালে তাঁর প্রথম কবিতা মায়ের কবর পাড়ে কিশোর পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল ম্যাগাজিনে ছাপা হয়৷ পরবর্তী সময়ে ছাত্রাবস্থায় কলকাতার কয়েকটি সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হলে নিজের সম্পর্কে আস্থা বেড়ে যায়৷ স্কুলে পড়াকালীন তিনি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুকে কবিতায় উপস্থাপিত করে পুরস্কৃত হয়েছিলেন৷ ততদিনে অবশ্য দেশ, মোহাম্মদী, বিচিত্রার মতো নামি দামি পত্রপত্রিকায় তাঁর বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়ে গেছে৷ কলকাতা গিয়ে শুরু হয় আহসান হাবীবের সংগ্রামমুখর জীবনের পথচলা৷ তিনি কলকাতায় এসে ১৯৩৭ সালে দৈনিক তকবির পত্রিকার সহ-সম্পাদকের কাজে নিযুক্ত হন ।  বেতন মাত্র ১৭ টাকা৷ পরবর্তীতে তিনি ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কলকাতার বুলবুল পত্রিকা ও ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত মাসিক সওগাত পত্রিকায় কাজ করেন৷ এছাড়া তিনি আকাশবাণীতে কলকাতা কেন্দ্রের স্টাফ আর্টিস্ট পদে ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কাজ করেন৷
 +
 
 +
== মৃত্যু ==
 +
 
 +
১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন।
 +
 
 +
== রচনাবলী ==
 +
 
 +
কাব্যগ্রন্থ, বড়দের উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটদের ছড়া ও কবিতার বই সব মিলিয়ে আহসান হাবীবের বইয়ের সংখ্যা ২৫টি।
 +
 
 +
== কবিতা ==
 +
 
 +
রাত্রিশেষ (১৯৪৮)
 +
ছায়াহরিণ (১৯৬২)
 +
সারা দুপুর (১৯৬৪)
 +
আশায় বসতি (১৯৭৪)
 +
মেঘ বলে চৈত্রে যাবো (১৯৭৬)
 +
দু'হাতে দুই আদিম পাথর (১৯৮০)
 +
প্রেমের কবিতা (১৯৮১)
 +
বিদীর্ণ দর্পনে মুখ (১৯৮৫)
 +
 
 +
== উপন্যাস ==
 +
 
 +
রাণী খালের সাঁকো
 +
আরণ্য নীলিমা
 +
 
 +
== শিশু সাহিত্য ==
 +
 
 +
জোছনা রাতের গল্প
 +
ছুটির দিন দুপুরে
 +
বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
 +
ছুটির দিন দুপুরে
 +
রেলগাড়ি ঝমামমে
 +
রাণীখালের সাঁকো
 +
জোৎসনা রাতের গল্প
 +
ছোট মামা দি গ্রেট
 +
পাখিরা ফিরে আসে
 +
রত্নদ্বীপ ( ট্রেজার আইল্যান্ডর সংৰিপ্ত অনুবাদ )
 +
হাজীবাবা
 +
প্রবাল দ্বীপে অভিযান ( কোরাল আইল্যান্ডর সংৰিপ্ত অনুবাদ )
 +
 
 +
== সম্পাদিত গ্রন্থ ==
 +
 
 +
কাব্যলোক
 +
বিদেশের সেরা গল্প
 +
 
 +
== পুরস্কার ==
 +
 
 +
ইউনেস্কো সাহিত্য পুরস্কার একাডেমী পুরস্কার (১৯৬১)
 +
আদমজী পুরস্কার (১৯৬৪)
 +
নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৭৭)
 +
একুশে পদক (১৯৭৮)
 +
আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০)
 +
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার
 +
বাংলা একাডেমী পুরস্কার
 +
 
  
 
----
 
----
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।
+
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

১১:০০, ২৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখের সংস্করণ

আহসান হাবীব.jpg

আহসান হাবীব (জন্ম: ২ জানুয়ারি, ১৯১৭ - মৃত্যু: ১০ জুলাই, ১৯৮৫) (ইংরেজি: Ahsan Habib) একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশী কবি ও সাহিত্যিক। দীর্ঘ দিন দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদের দায়িত্ব পালন সূত্রে তিনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে অভিভাবকের ভূমিকা রেখেছেন। তিনি পঞ্চাশ দশকের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি হিসেবে পরিগণিত।


জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আহসান হাবীবের জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পিরোজপুরের শংকরপাশা গ্রামে৷ পিতার নাম হামিজুদ্দীন হাওলাদার৷ মাতা জমিলা খাতুন৷ তাঁর পাঁচ ভাই ও চার বোন৷ অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল পিতা মাতার প্রথম সন্তান তিনি৷ পারিবারিক ভাবে আহসান হাবীব সাহিত্য সংস্কৃতির আবহের মধ্যে বড় হয়েছেন৷ সেই সূত্রে বাল্যকাল থেকেই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি৷ সেইসময় তাঁর বাড়িতে ছিল আধুনিক সাহিত্যের বইপত্র ও কিছু পুঁথি৷ যেমন আনোয়ারা, মনোয়ারা, মিলন মন্দির প্রভৃতি৷ এসব পড়তে পড়তে একসময় নিজেই কিছু লেখার তাগিদ অনুভব করেন৷ সাহিত্যের অনুকূল পরিবেশ নিয়ে পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ১৯৩৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷ এরপর তিনি চলে আসেন বরিশালে৷ ভর্তি হন সেখানকার বিখ্যাত বিএম কলেজে৷ কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কলেজের পড়াশোনার পাঠ শেষ পর্যন্ত অসমাপ্ত রাখতে হয় তাঁকে৷ বিএম কলেজে দেড় বছর পড়ার পর ১৯৩৬ সালের শেষার্ধে কাজের খোঁজে তিনি রাজধানী কলকাতায় পাড়ি জমান৷ এভাবেই কবি আহসান হাবীবের বরিশাল থেকে তত্‍কালীন রাজধানী কলকাতায় পদার্পণ৷

কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবন

আহসান হাবীব ১৯৪৭ সালের ২১ জুন বিয়ে করেন বগুড়া শহরের কাটনারপাড়া নিবাসী মহসীন আলী মিয়ার কন্যা সুফিয়া খাতুনকে। আহসান হাবীব দুই কন্যা (কেয়া চৌধুরী ও জোহরা নাসরীন) ও দুই পুত্রের (মঈনুল আহসান সাবের ও মনজুরুল আহসান জাবের) জনক ছিলেন। পুত্র মঈনুল আহসান সাবের একজন স্বনামখ্যাত বাংলা ঔপন্যাসিক। ১২/১৩ বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময়ই ১৯৩৩ সালে স্কুল ম্যাগাজিনে তাঁর একটি প্রবন্ধ ধরম প্রকাশিত হয়৷ ১৯৩৪ সালে তাঁর প্রথম কবিতা মায়ের কবর পাড়ে কিশোর পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল ম্যাগাজিনে ছাপা হয়৷ পরবর্তী সময়ে ছাত্রাবস্থায় কলকাতার কয়েকটি সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হলে নিজের সম্পর্কে আস্থা বেড়ে যায়৷ স্কুলে পড়াকালীন তিনি প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুকে কবিতায় উপস্থাপিত করে পুরস্কৃত হয়েছিলেন৷ ততদিনে অবশ্য দেশ, মোহাম্মদী, বিচিত্রার মতো নামি দামি পত্রপত্রিকায় তাঁর বেশ কিছু লেখা প্রকাশিত হয়ে গেছে৷ কলকাতা গিয়ে শুরু হয় আহসান হাবীবের সংগ্রামমুখর জীবনের পথচলা৷ তিনি কলকাতায় এসে ১৯৩৭ সালে দৈনিক তকবির পত্রিকার সহ-সম্পাদকের কাজে নিযুক্ত হন । বেতন মাত্র ১৭ টাকা৷ পরবর্তীতে তিনি ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কলকাতার বুলবুল পত্রিকা ও ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত মাসিক সওগাত পত্রিকায় কাজ করেন৷ এছাড়া তিনি আকাশবাণীতে কলকাতা কেন্দ্রের স্টাফ আর্টিস্ট পদে ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কাজ করেন৷

মৃত্যু

১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন।

রচনাবলী

কাব্যগ্রন্থ, বড়দের উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটদের ছড়া ও কবিতার বই সব মিলিয়ে আহসান হাবীবের বইয়ের সংখ্যা ২৫টি।

কবিতা

রাত্রিশেষ (১৯৪৮) ছায়াহরিণ (১৯৬২) সারা দুপুর (১৯৬৪) আশায় বসতি (১৯৭৪) মেঘ বলে চৈত্রে যাবো (১৯৭৬) দু'হাতে দুই আদিম পাথর (১৯৮০) প্রেমের কবিতা (১৯৮১) বিদীর্ণ দর্পনে মুখ (১৯৮৫)

উপন্যাস

রাণী খালের সাঁকো আরণ্য নীলিমা

শিশু সাহিত্য

জোছনা রাতের গল্প ছুটির দিন দুপুরে বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর ছুটির দিন দুপুরে রেলগাড়ি ঝমামমে রাণীখালের সাঁকো জোৎসনা রাতের গল্প ছোট মামা দি গ্রেট পাখিরা ফিরে আসে রত্নদ্বীপ ( ট্রেজার আইল্যান্ডর সংৰিপ্ত অনুবাদ ) হাজীবাবা প্রবাল দ্বীপে অভিযান ( কোরাল আইল্যান্ডর সংৰিপ্ত অনুবাদ )

সম্পাদিত গ্রন্থ

কাব্যলোক বিদেশের সেরা গল্প

পুরস্কার

ইউনেস্কো সাহিত্য পুরস্কার ও একাডেমী পুরস্কার (১৯৬১) আদমজী পুরস্কার (১৯৬৪) নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৭৭) একুশে পদক (১৯৭৮) আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০) স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার বাংলা একাডেমী পুরস্কার



তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া