আড়িয়াল খা

Barisalpedia থেকে

রামায়ণে বর্ণিত পাবনী নদী মধ্যযুগে ক্ষীণ হয়ে পদ্মার সাথে মিলিত হয় এবং আন্দাল খাল বা আড়িয়াল খাঁ নামে ফরিদপুর হয়ে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে বরিশালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। আড়িয়াল খা ফরিদপুর অতিক্রম করে বরিশালে এসে দুধারায় বিভক্ত হয়। এক ধারার নাম হয় টরকী ও অন্য ধারার নাম আড়িয়াল খা রয়ে যায়। পদ্মার প্রধান প্রবাহ আড়িয়াল খা নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। রেনেলের ম্যাপে দেখা যায় ১৮ শতকে মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ নোয়াখালীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত হতো। তখন মেহেন্দীগঞ্জ হতে বিক্রমপুর পর্যন্ত স্থলভাগ ছিল, মাঝখানে কোনা জলবিভজিকা ছিল না। দক্ষিণ শাহবাজপুর বা ভোলা মেহেন্দীগঞ্জের সাথে একত্রিত ছিল।

১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে তিস্তার বন্যার সময় পদ্মার স্রোত আড়িয়াল খাঁ দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। ফলে এক রাতে হঠাৎ নয়াভাঙ্গানী নদীর সৃষ্টি হয় এবং মেঘনা নদীর সাথে ছবিপুর নদী হিজলা-মুলাদীর নিকট মিলিত হয়। ছবিপুর নদী ছিল টরকী নদীর পূর্ব ভাগের নাম। দক্ষিণ শাহবাজপুর বা ভোলা এ সময় হতে উত্তর শাহবাজপুর ও বরিশালের মূল ভূখন্ড হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। টরকী, ছবিপুর, নয়াভাঙ্গনী ও আড়িয়াল খা’র প্রবাহ দক্ষিণে প্রায় ২০ মাইল প্রবাহিত হয়ে মেঘনার শাখা ইলিশা নদীর সাথে মেহেন্দীগঞ্জের নিকট মিলিত হয়। আড়িয়াল খা’র দৈর্ঘ্য ২০ মাইল, প্রস্থ ১ মাইল। ছবিপুর, লতা, নয়াভাঙ্গানী ও কীর্তনখোলা হলো আড়িয়াল খার শাখা নদী।


তথ্যসূত্র: সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।