আগৈলঝাড়া প্রজা কনফারেন্স ১৯২১

Barisalpedia থেকে

তৎকালীন গৌরনদী থানার আগৈলঝাড়া গ্রামে অনুষ্ঠিত প্রজা সম্মেলনে কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা।

১৯২১ খ্রিস্টাব্দের এ কে ফজলুল হক ও হাশেম আলী খানের নির্দেশে আগৈলঝাড়া উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ের মাঠে প্রজা কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। আগৈলঝাড়ার ভেগাই হালদার, কসবার আবদুল মাজেদ কাজী, মৈস্তারকান্দির যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল, স্যারালের আব্দুল খালেক সেরনিয়াবাত প্রমুখ সম্মেলনের আয়োজন করেন। যোগেন্ত্রনাথ মন্ডল ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান। সম্মেলনে আগত নেতৃবৃন্দের থাকা-খাওয়ার দায়িত্বে ছিলেন ভেগাই হালদার ও মাজেদ কাজী। হাজার হাজার কৃষক সম্মেলনে যোগ দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন হাশেম আলী খান।

কংগ্রেসের কৃষক সংগঠন ছিল না। তাই কংগ্রেস নেতারা আগৈলঝাড়ার কৃষক সম্মেলনে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কলকাতা থেকে কংগ্রেস নেতা শরৎ চন্দ্র গুহ প্রমুখ আগৈলঝাড়া অভিমুখে রওনা হন। প্রজা পার্টির নেতৃবৃন্দ তাদের সম্মেলনে যোগদানের বিরোধিতা করেন। হাশেম আলী খান ও মাজেদ কাজীর পরামর্শে যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল ও ভেগাই হালদার এগিয়ে যান কংগ্রেস নেতাদের সম্মেলনে না আসার জন্য অনুরোধ জানাতে। কংগ্রেস নেতারা বরিশালে ফিরে যান। অবশ্য পরে তারা আগৈলঝাড়া এসেছিলেন।

প্রজা সম্মেলনে ললিত কুমার বল, বাণীকণ্ঠ সেন, মফিজ উদ্দিন উকিল, মাজেদ আলী ও যোগেন্দ্রনাথ মÐল বক্তব্য রাখলেন। সভাপতি হাশেম আলী খানের বক্তৃতা কৃষক সমাজকে এক বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য উদ্বুদ্ধ করে। এই সম্মেলনে সাহিত্যিক মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী ও সৈয়দ আজিজুল হক নান্না মিয়া উপস্থিত ছিলেন। মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ হতেও হাজার হাজার কৃষক এই সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিল। এই সম্মেলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন কসবার মাজেদ কাজী। সম্মেলনে প্রায় পাঁচ হাজার নমঃশুদ্র মহিলা এসেছিলেন। হাশেম আলী খান, ইয়াকুব আলী ও যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল পৃথকভাবে তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।



তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খন্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০।