অশ্বিনীকুমারের তমাল গাছ
বরিশাল কলেজের প্রাচীন তমাল গাছ তথা তমাল তলাটি শহরের এক পবিত্র স্মৃতিবিজড়িত স্থান। ১২৫ বছরের চেয়েও পুরনো এগাছটি লাগিয়েছিলেন মহাত্মা অশি^নীকুমার দত্ত। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের বাবরী মসজিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকালে ঐতিহাসিক অশ্বিনী ভবন ভেঙ্গে ফেলা হলেও এ গাছটি এখনো মহাকালের অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়ে বেঁচে আছে। তমাল গাছটি তলা ছিল অশি^নীকুমারের বহির্বাটিস্থ বৈঠকখানা। এই তমাল গাছের নিচে বসে অশ্বিনীকুমার দত্ত বাংলার রাজনীতি পরিচালনা করেছেন। মহাত্মা গান্ধী, চিত্তরঞ্জন দাশ, মৌলানা মোহাম্মদ আলী, এ. কে. ফজলুল হক, নেতাজী সুভাস চন্দ্রবসু, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী প্রমূখ এই তমাল গাছের নিচে ভারতের ও বাংলার রাজনীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতেন। এক সময় বাংলার অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের অনুপ্রেরণায় বরিশাল কলেজ থেকে একটি দেয়াল পত্রিকা বের হতো। এই গাছের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন স্বরূপ এই দেয়ালিকার নামও ছিল তমাল। ২০০৩ খৃৃস্টাব্দে তমাল গাছেটি কেটে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়। বরিশালের জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে গাছটি কাটা আপাতত বন্ধ আছে। ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সস্ত্রীক বেড়াতে এসে অশ্বিনীকুমারের স্মৃতির সম্মানে এখানে কিছুসময় কাটিয়ে ছিলেন।
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (১ম খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১০। ২। দৈনিক ইত্তেফাক, ৪ নভেম্বর ২০১৭।