"অরুণা আসফ আলি"-এর বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
("দিল্লির প্রথম মেয়র অরুণা আসফ আলি ১৬ জুলাই ১৯০৯ সালে পাঞ্..." দিয়ে পাতা তৈরি) |
(কোন পার্থক্য নেই)
|
১২:০৭, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে সম্পাদিত বর্তমান সংস্করণ
দিল্লির প্রথম মেয়র অরুণা আসফ আলি ১৬ জুলাই ১৯০৯ সালে পাঞ্জাবের কালকায় এক প্রবাসী বাঙালি ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক আদি নিবাস বরিশালে। তাঁর পিতার নাম উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। অরুণা আসফ আলির মৃত্যু ২৯ জুলাই ১৯৯৬ তারিখ।
পরিচ্ছেদসমূহ
বিয়ে
অরুণা আসফ আলির পড়াশোনা লাহোর ও নৈনিতালের খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে। মাত্র উনিশ বছর বয়সে প্রচলিত রীতিনীতিকে উপেক্ষা করে তিনি আসফ আলি (পরবর্তীকালের স্বাধীনতা আন্দোলনে কংগ্রেসের সমাজবাদীগোষ্ঠীর নেতা)- কে বিবাহ করেন।
রাজনীতি ও বৃটিশবিরোধী কর্মকান্ড
১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে লবণ আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে এক বছর কারারুদ্ধ থাকেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় গ্রেপ্তার হন। দিল্লি জেলা জেলে বন্দিদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে অনশন করলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে আম্বালার নির্জন কারাবাসে রাখা হয়। এই সময় থেকেই জয়প্রকাশ নারায়ণ, অচ্যুত পটবর্ধন এবং রামমোহন লোহিয়ার সংস্পর্শে এসে সমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণায় উদ্দীপ্ত হতে থাকেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অদম্য সাহসের জন্য তিনি ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত হন। ৯ আগস্ট ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে মুম্বাইয়ের গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে (অধুনা মুম্বাইয়ের আগস্ট ক্রান্তি ময়দান) স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কথা ছিল আবুল কালাম আজাদের। তার আগেই গান্ধীজিসহ কংগ্রেসের নেতারা সবাই গ্রেপ্তাার হয়ে গিয়েছেন। ময়দানে যখন অধীর জনসমুদ্র তখন ব্রিটিশ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে ছুটে এসে তা উত্তোলন করে সেই দিনই ক্রান্তিকন্যারূপে জনসমুদ্রে দুর্বার আন্দোলনের ঢেউ তোলেন। ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে ধরপাকড় এড়িয়ে আত্মগোপন অবস্থায় তিনি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সমাজবাদী সহযোদ্ধাদের সঙ্গে প্রচার পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন। স্বাধীনতার পূর্ব মূহূর্ত পর্যন্ত তিনি আত্মগোপন করে ছিলেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী জীবন
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি দিল্লির মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি নগরোন্নয়নের এমন কিছু প্রকল্প নেন যার সঙ্গে আমলাতন্ত্রের সংঘাত দেখা দেয়। ফলে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে মেয়রপদ থেকে তিনি সরে আসেন। তিনিই দিল্লির প্রথম মেয়র। তিনি আর কোনো সরকারি পদাধিকারীর দায়িত্ব নেননি। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসের সমাজবাদী নেতারা দল ছেড়ে নতুন পার্টি গঠন করলে তিনি তার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে বামপন্থী সমাজবাদী পার্টির বহু নেতা অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ওই সময় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ লাভ করেন। শ্রমিক সংগঠন ও জাতীয় মহিলা ফেডারেশনেরর তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। নারী পুরুষের সমানাধিকারে বিশ্বাসী ছিলেন। তবে মহিলাদের জন্য আলাদা সুযোগসুবিধা দানের প্রশ্নে তিনি মনে করতেন তাতে মহিলাদের আরও নীচে ঠেলে দেওয়া হয়। তাই এই ধরনের আন্দোলনকে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছেন। পরে তিনি ক্রমে রাজনীতি থেকে সরে সমাজসেবা ও লেখালেখির ক্ষেত্রে চলে আসেন।
লেখালেখি ও পুরস্কার
ইংরেজি দৈনিক ‘প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে অশান্ত পাঞ্জাবে সংহতির জাঠায় তিনি মিছিলে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিন শান্তি পুরস্কার, ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ইন্দিরা গান্ধী সংহতি পুরস্কার এবং ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে জওহরলাল নেহরু পুরস্কার পান। ‘ভারতরতœ’ উপাধি পান মৃত্যুর পরে।
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।