গোলাম মাহবুব, কাজী

Barisalpedia থেকে

কাজী গোলাম মাহবুব ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) সংঘটিত ভাষা আন্দোলনের অন্যমত সক্রিয় কর্মী। তিনি একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কাজ করেছেন। তাঁর সম্মানে ধানমন্ডি আবাসিক এলকার ১০ নম্বর সড়কটিকে ভাষাসৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব সড়ক হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।


শিক্ষা ও কর্মজীবন

কাজী গোলাম মাহবুব বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার কসবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গৌরনদীর টর্কি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং পরবর্তীতে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ শিক্ষা অর্জনের জন্য গিয়েছিলেন। সেখানে কলেজের ছাত্র পরিষদে তিনি ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলএম ছাত্র হিসেবে আইন পরিষদে ভর্তি হন। কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র এডভোকেট ছিলেন।

১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি শেখ মুজিবুর রহমান, খালেক নওয়াজ খান, শামসুল হক সহ অন্যান্য ছাত্রনেতাদের সাথে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই সময় তিনি ছাত্র অ্যাকশন কমিটি যোগ দিয়েছিলেন যে কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটে সহায়তা করার জন্য গ্রেপ্তার হন।

কাজী মাহবুব আওয়ামী লীগ তথা আওয়ামী মুসলিম লীগ-এর একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। জানুয়ারী ৩১, ১৯৫২ তারিখে যখন, সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মীপরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়, কাজী মাহবুবকে সেটার আহ্বায়ক হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারীর আমতলা সভায় কাজী মাহবুব উপস্থিত ছিলেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সমাবেশে যোগদান করেন।‌ পরে, তিনি গ্রেফতার হন এবং এক বছর কারাগারে অতিবাহিত করেন।

১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের গর্ণ-অভ্যূত্থানের সময় তিনি মাওলানা ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির একজন কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

তথ্যসূত্র: বরিশাল দর্পণ, ও উইকিপিডিয়া