করুণা বেগম
করুণা বেগম নবম সেক্টরের একজন সাহসী মহিলা মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গৌরনদীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নিজাম উদ্দিনের অধীনে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৫৩ সালের মুলাদী উপজেলার মুলাদী সাগরপারের চরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে ১৭ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ছদ্মবেশে যুদ্ধে অংশ নিতেন। তিনি ছেলের ন্যায় প্যান্ট-শার্ট ও মাথায় কাপড় পরতেন। তাকে পুরুষের মতো দেখাতো। গৌরনদী থানার মাহিলারা ব্রিজের নিকট পাকবাহিনরি ঘাঁটি ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা নভেম্বর মাসে আক্রমণ চালায়। সম্মুখযুদ্ধে করুণা ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। কাছে হাসপাতাল না থাকায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে কৌশলে বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৬ ডিসেম্বরের পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ও পিজি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তার পা ভাল হয়নি। পঙ্গু হিসেবে তাকে বেঁচে থাকতে হয়। হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু তাকে দেখতে যান। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি লালবাগে থাকার জন্য জমি বরাদ্দ পেয়েছেন। গুলিতে আহত তার পা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়। প্রায় বিনা চিকিৎসায় করুণা বেগম ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তাকে আজিমপুরে দাফন করা হয়েছে। করুণা বেগমের স্বামী মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা মানিক। তাদের তিন মেয়ে এক ছেলে।
তথ্যসূত্র: ১। সিরাজ উদ্দীন আহমেদ। বরিশাল বিভাগের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড)। ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা। ২০১৫।