উপেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ শাস্ত্রী
অধ্যাপক ও সাহিত্যক। জন্ম ১৫ নভেম্বর ১৮৬৭। মৃত্যু ২১ জুলাই ১৯৫৯। আদি নিবাস রায়েরকাঠি পিরোজপুর। পিতা রায়েরকাঠি রাজবংশের রাজা শশিভুষণ রায় চৌধুরী। মাতা মুক্তকেশী। খ্যাতনামা সংস্কৃতবিদ, আদর্শ শিক্ষাব্রতী, বাংলায় সর্বস্তরে সর্বজাতির জন্য সংস্কৃত শিক্ষা তথা বেদপাঠের অধিকার আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং বেদ, বেদান্ত, জৈন ও বৌদ্ধশাস্ত্রে পণ্ডিত ছিলেন। বরিশাল জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স ও সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃত ও ইংরেজি উভয় বিষয়ে অনার্স-সহ বি.এ. পাশ করেন। ভারত সরকার কতৃর্ক ‘বিদ্যাভূষণ শাস্ত্রী’ উপাধিতে ভূষিত হন। কর্মজীবন শুরু অধুনালুপ্ত সেঞ্চুরি কলেজের ইংরেজি সাহিত্য ও ভারতীয় দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপক হিসাবে (১৮৯২-১৮৯৮)। আনন্দমোহন বসুর আহ্বানে নবপ্রতিষ্ঠিত সিটি কলেজে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের প্রধান অধ্যাপকরূপে যোগ দেন (জুলাই ১৮৯৮)। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগেও তিনি প্রধান অধ্যাপক ও বহু বছর কলেজের সহাধ্যক্ষ ছিলেন।১৯৩৮ খ্রি. অবসর গ্রহণের পরও ‘সম্মানিত অধ্যাপক’রূপে ওই কলেজে আমৃত্যু তাঁর নাম ছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ¯স্নাতক ও ¯স্নাতকোত্তর বিভাগের সংস্কৃত/বাংলার প্রশ্নপত্র রচয়িতা ও পরীক্ষক এবং শিক্ষা বিষয়ক সরকারি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ছিলেন। পাণ্ডিত্যপূর্ণ মৌলিক রচনাবলির জন্য বিলেতের রয়াল এশিয়াটিক সোসাইটি তাঁর সম্মানিত সদস্য নির্বাচিত করেন। ১০খানি বাংলা জীবনী গ্রন্থ, ৭খানি মঞ্চসফল নাটক এবং অর্ধশতাধিক ইতিহাসতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব ও দর্শনসংক্রান্ত মৌলিক গবেষণা-নিবন্ধাদি রচনা করেছেন। সুকবি ছিলেন। রচিত প্রার্থনা সংগীতগুলি তার নিদর্শন। তিনি নাট্য আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
তথ্যসূত্র: সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান।