আনজুমানে হেমায়েত-এ-ইসলাম
এটি ধর্মীয় ও সমাজসেবা মূলক সমিতি যা খান বাহাদুর হেমায়েতউদ্দীন খান কর্তৃক ১৮৯৩ সালে ২১ মে বরিশালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঢাকায় আনজুমানে আহবাবে ইসলামীয়া (মুসলিম সুহৃদ সম্মিলনী) পরিচালনা ও রেনেসাঁ আন্দোলনের প্রেরণা নিয়ে বরিশালে এসে হেমায়েত উদ্দীনের উদ্যোগে একের পরে এক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। বরিশাল শহরকে কেন্দ্র করেই তাঁর সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও রাজনৈতিক বিষয়ক ক্রিয়াকর্ম আবর্তিত হতো। ১৮৯৩ সালের ২১ মে হেমায়েতউদ্দীন বরিশাল আঞ্জুমানে হেমায়েত-এ-ইসলাম নামে একটি ধর্মীয় ও সমাজসেবা মূলক সমিতি স্থাপন করেন। সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন এ. কে. ফজলুল হকের পিতা মুহাম্মদ ওয়াজেদ ও সেক্রেটারি ছিলেন হেমায়েত উদ্দীন। সহসভাপতি ছিলেন ওবায়দুল গণি ( আগরপুর রোড) ও মুহাম্মদ ইসমাইল চৌধুরী। হেমায়েত উদ্দীন আমৃত্যু প্রায় অর্ধশতক এ সমিতির সেক্রেটারী থেকে সমকলীন সমস্যাদি সমাধানের প্রয়াস পান। ১৯২৩ সালে বাংলা সরকার প্রণীত সংশোধিত সমিতি তালিকায় বরিশালের আঞ্জুমানে হেমায়েত-এ-ইসলামের উদ্দেশ্য সম্পর্কে উল্লেখ ছিল- Improvement of The condition of the Muhammedans generally and specially of the District of Bakergonj and to give opinions on political matters when asked by Goverment। এই সমিতির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তৎপরতায় গোটা বরিশাল জেলায় হজ্ব যাত্রায় উদ্বুদ্ধকরনসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সমাজ সেবার উন্মেষ ঘটে। ১৮৯৫ সালে সরকারের পিলগ্রিমশিপ বিল অনুসারে হজ্ব যাত্রীদের প্রথম টীকা দানের নিয়ম চালু হয়। ধর্মচ্যুতির আশংকায় সেকালে মুসলমানদের টীকাগ্রহণে আপত্তি ছিল। হেমায়েতউদ্দীনের আঞ্জুমান এ জাতীয় কুসংস্কার দূর করতে সক্ষম হয়। হেমায়েত উদ্দিন আহম্মদ আঞ্জুমানে হেমায়েত ইসলাম নিয়ে বঙ্গভঙ্গকে সমর্থন দেন।
লেখক: ১। প্রফেসর মোসলেম উদ্দিন সিকদার। ২। সিরাজউদ্দিন আহমেদ। বরিশালের ইতিহাস ১ম খন্ড।